জার্মানি থেকে ফাতেমা রহমান রুমা: অদম্য ইচ্ছাশক্তিই গৌরবের সারথি। ৫২ বছর বয়সী বাংলাদেশি ক্রীড়ামোদি, বিশিষ্ট দৌড়বিদ শিবা শংকর পাল ইন্টারলকেণ্ট সেন্ট্রাল সুইজারল্যান্ডে ২৬তম ইয়ংফ্রাউ ৯৮তম আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশ নিয়েছেন। আর এ বছরের নভেম্বরে নিউইয়র্কে ১০০তম ম্যারাথনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জার্মান প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিবা শংকর পাল।
দৌড়ের কোড নাম্বার হাতে শিবা শংকর পাল
জানা গেছে, গত ১২ই আগস্টে শিবা শংকর পাল জার্মানির বায়ার্নের আলগয়ে ঐতিহ্যবাহী আলগয় প্যানারোমা ম্যারাথনে বিশ্বের প্রায় দেড় হাজার প্রতিযোগীর সঙ্গে একমাত্র বাংলাদেশি দৌড়বিদ হিসেবে ৯৭তম আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশ নেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে লাল-সবুজের পতাকা উড়ানোর ঐতিহাসিক গৌরব অর্জন করেছে চলেছেন শিবা শংকর পাল।
৫২ বছর বয়সী দৌড়বিদ শিবা শংকর পাল
বায়ার্নের আলগয়ে জনথফেনের প্যানারোমা ম্যারাথন মানেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা উঁচু-নিচু পাহাড় আর সমতলের ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো। আর এই ট্র্যাকে দৌঁড়াতে হলে প্রয়োজন বাড়তি দৈহিক শক্তি ও দম। যা শিবা শংকর পাল ৫২ বছর বয়সেও দেখাতে সক্ষম হয়েছেন।
পরিবারের সদস্যদের সাথে দৌড়বিদ শিবা শংকর পাল
শিবা শংকর পাল মানুষটা ছোট খাট গড়নের হলেও দৌড়ান বেশ। প্রতিযোগিতায় প্রথম ১০ জনের তালিকায় তিনি থাকতে না পারলেও শিবা শংকর পাল মনে করেন, ম্যারাথনের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে পরিচিত করানোই তার প্রধান লক্ষ্য।
খোঁজ নিয়ে যায়, রাজধানী ঢাকার অদূরে নবাবগঞ্জে জন্ম নেয়া ক্রীড়াপ্রেমিক শিবা শংকর পাল পেশায় একজন সফল ব্যবসায়ী। জার্মানির মিউনিখের সুপরিচিত পাল ইলেকট্রনিকের স্বত্বাধিকারী তিনি। জার্মান অভিবাসী উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি জার্মানির সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছেন। যার স্বীকৃতিস্বরূপ ইতিমধ্যে তিনি সম্মানিত হয়েছেন দেশটির সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নানা সম্মাননায়।
জীবনের শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য হিসেবে ৫২ বছর বয়সী শিবা শংকর পাল মনে করেন, আগামী নভেম্বরে আমেরিকার নিউইয়র্কে ১০০তম ম্যারাথনে অংশ নেয়ার বিষয়টিকে তিনি খুবই বড় করে দেখছেন। কারণ কোনো বাংলাদেশীর ১০০তম আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশগ্রহণের বিরল অর্জনটি তিনিই করতে যাচ্ছেন।
এদিকে অলিম্পিকের পর ইন্টারলকেণ্ট সেন্ট্রাল সুইজারল্যান্ডে ২৬তম ইয়ংফ্রাউ ম্যারাথনে বিশ্বের ৬৬টি দেশের প্রায় চার হাজার দৌড়বিদের সঙ্গে চতুর্থবারের মতো ৯৮তম ম্যারাথন অংশ নেন একমাত্র বাংলাদেশী শিবা শংকর পাল।
এ বিষয়ে অনুভূতি ব্যক্তকারী শিবা শংকর পাল বলেন, ৯৯তম ম্যারাথন হবে আমার বাসভূমি মিউনিক ম্যারাথন। আর এ বছরের নভেম্বরে নিউইয়র্ক ম্যারাথনে একমাত্র বাংলাদেশের পক্ষে লাল-সবুজের পতাকা হাতে ১০০তম ম্যারাথনে অংশ নেয়াই হবে আমার জন্য জীবনের সেরা সাফল্য।
ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী শিখা, দুই ছেলে ম্যাক্সি মিলিয়ান ও দিব্য আর মেয়ে ত্রয়ীকে নিয়ে সুখী সংসার জীবনের অধিকারী শিবা শংকর পাল। সফল হয়েছেন উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী এবং ক্রীড়া অনুরাগী হিসেবে। যা, আজ শুধু দেশে নয়, বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে যাচ্ছে অদম্য ইচ্ছাশক্তির প্রাণপুরুষ শিবা শংকর পালের গৌরগাথা ম্যারাথনের গল্প-কাব্য। আর অনেকের কাছে তিনি হয়ে উঠেছেন বিশেষ অনুপ্রেরণা।