জার্মানবাংলা২৪ ডটকম: সিরিয়ার সরকার ও তার মিত্র রাশিয়া দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় দেরা প্রদেশে ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গত বুধবার বিদ্রোহীদের সাথে রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর দেরায় ১৫ ঘণ্টায় ৬০০ বারেরও বেশি বিমান হামলা চালানো হয়।
বোমাবর্ষণের তীব্রতায় পালিয়ে আসা ৪৭ বছর বয়সী এক সিরীয় বলেন, আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার ঘোষণা আসার পর থেকে এক মুহূর্তের জন্য বোমাবর্ষণ বন্ধ হয়নি। এখন আমরা জলপাই গাছের নিচে আশ্রয় নিয়েছি। এখন আমরা সব কিছুকে ভয় পাচ্ছি, বোমাকে, পোকামাকড়কে, সব কিছুকে। এখানে পান করার জন্য কোনো পানি নেই, নেই কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা। সব কিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি খুবই কঠিন।
এ দিকে দেরায় সরকারি বাহিনীর হামলায় জর্দান সীমান্তের দিকে ছুটে যাওয়া ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কোনো রকম আশ্রয় ছাড়া মরুভূমিতে আটকা পড়া এসব মানুষের সহযোগিতার জন্য ত্রাণসংস্থা ও চিকিৎসকেরা আহ্বান জানিয়েছেন। জর্দান ও ইসরাইলের সীমান্তবর্তী দেরা সিরিয়ার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল।
জাতিসংর্ঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহে সিরীয় সরকারের অভিযানের মুখে ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ দেরা ছেড়ে জর্দান ও ইসরাইল সীমান্তের দিকে পালিয়েছেন। এদের মধ্যে ১ লাখ ৬০ হাজার গোলান মালভূমি ও ইসরাইল সীমান্তের দিকে ছুটে গেছেন। দেরাতে সরকারি বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
গোলান মালভূমির কাছে কিউনেত্রাতে অবস্থান করা এক চিকিৎসক বলেন, মানবিক পরিস্থিতি খুব খারাপ। এলাকাটি খুব ছোট। পুরো শহর ও গ্রাম বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এটা বড় ধরনের ট্র্যাজেডি। চিকিৎসাকর্মীরা জানান, ১৯ জুন শুরু হওয়া অভিযানে আটটি হাসপাতালে বোমা ফেলা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন ইউএনএইচসিআর জানায়, প্রায় ৪০ হাজার সিরীয় জর্দান সীমান্তে অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে সাড়ে ছয় লাখ নিবন্ধিত সিরীয় উদ্বাস্তু রয়েছেন। জর্দানে জাতিসংঘের আবাসন ও মানবাধিকারবিষয়ক সমন্বয়ক অ্যান্ডার্স পেডারসেন বলেন, সঙ্কট শুরুর পর এটাই সিরিয়ায় সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনা।