নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার এক স্কুলছাত্রী নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে গিয়ে হাজির হয়। ইউএনও জামিরুল ইসলাম ছাত্রীর বক্তব্য শুনে তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। আগামী মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরপ্রবাসী এক যুবকের সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
ইউএনওর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাবেকুন নাহার নামের ওই ছাত্রী উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার আবু নাছের চৌধুরী পৌর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ে। ছাত্রী হিসেবে সে মেধাবী। কিন্তু এরই মধ্যে তার পরিবার একই উপজেলার চরকাঁকড়া এলাকার সিঙ্গাপুরপ্রবাসী এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করে। সাবেকুন বিষয়টি মানতে পারেনি। তাই সে সকাল সাড়ে দশটার দিকে ইউএনওর কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করে পুরো বিষয়টি খুলে বলে এবং তার হস্তক্ষেপ কামনা করে।
ইউএনও মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, তিনি ছাত্রীর কাছ থেকে বাল্যবিবাহের আয়োজনের বিষয়টি জানার পর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নূর নবী এবং পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে নিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন বলেন, ওই ছাত্রী খুব মেধাবী। তাঁর বিয়ে ঠিক করার বিষয়টি তিনি জানতেন না। ইউএনওর কাছ থেকেই শুনেছেন এবং তিনিও বিদ্যালয়-সংলগ্ন ছাত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। ছাত্রীর পরিবার যাতে তাঁকে বাল্যবিবাহ দিতে না পারে, সে বিষয়ে তাঁরা এখন থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন।
উল্লাপাড়ায় বাল্যবিবাহ বন্ধ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় স্কুলছাত্রীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছেন উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারুক সুফিয়ান। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কৈবর্তগাঁতী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারুক সুফিয়ান বলেন, কৈবর্তগাঁতী গ্রামের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আঁখি খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার সুজা গ্রামের ব্যবসায়ী মো. রাহাম হোসেনের (২০) সঙ্গে বিয়ে হচ্ছিল। বিকেলে খাওয়াদাওয়া শেষে বিয়ের আয়োজন চলছিল। এ সময় সেখানে গাড়ি নিয়ে হাজির হন ফারুক সুফিয়ান। স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় আঁখি খাতুনের স্বজনদের ডেকে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে বিয়েটি বন্ধ করেন।
অপ্রাপ্ত বয়সে আঁখির বিয়ে দেওয়া হবে না মর্মে নিশ্চয়তা চেয়ে তাঁর মা-বাবার কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে বিয়ের আসরে আসা স্থানীয় কাজি আবদুল মালেক আগেই পালিয়ে যান।