তোফাজ্জল হোসেন, মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল) পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। এতদিন পেরিয়ে গেলেও নিহতের ছোট ভাইয়ের কপালে আজও জুটেনি অফিস সহায়ক পদে চাকরি। দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মাঠ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে কর্তব্যরত অবস্থায় চেকপোষ্টে তল্লাশিকালে জঙ্গীদের গ্রেনেড হামলায় নেত্রকোনা মদন উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আনছারুল শাহাদৎ বরণ করেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারটি দিশেহারা হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন নিহতের পরিবার। ভিটে ভিটেবাড়ি ছাড়া অন্য কোন সহায় সম্পদ না থাকায় আনছারুলের ওপর নির্ভরশীল ছিল পরিবারটি।
আনছারুলের মা রাবেয়া খাতুন সরকারি আর্থিক সহযোগিতা না চেয়ে এক বেলা পেটপুরে খাওয়ার জন্য তারই ছোট ছেলে মাহামুদুল হাসান আইনুলকে যোগ্যতা অনুযায়ী অফিস সহায়ক চাকরি দেয়ার জন্য প্রশাসনের ধারে ধারে ঘুরেও কোন সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করতে পারছেন না। গত ১২ জানুয়ায়ী ২০১৮ ইং তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকায় অফিস সহায়ক হিসেবে তার ছোট ছেলের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৪ জানুয়ারী ২০১৮ইং তারিখে
জঙ্গি হামলায় নিহত ছেলের ছবি দেখে প্রতিনিয়ত চোখের পানি ফেলেন এই বৃদ্ধ মা
নেত্রকোনা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী, ডিআইজি, ময়মনসিংহ রেঞ্জ-এর মাধ্যমে যুগ্ম-সচিব ও সদস্য সচিব বিভাগীয় নির্বাচন কমিটি সুরক্ষা সেবা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠান।
অপরদিকে নাগরিকত্বের সনদপত্রে অতিরিক্ত সচিব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ড. রাখাল চন্ত্র বর্মণ ফায়ার সার্বিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে অফিস সহায়ক পদের জন্য সুপারিশ করলেও কোন কাজ হয়নি। বাচাঁর জন্য পরিবারের ছোট ছেলের একটি সরকারি চাকুরি চায় মা রাবেয়া খাতুন। অবশেষে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আশুহস্তক্ষেপ কামনা করছেন নিহত পুলিশ কনস্টেবলের মা রাবেয়া খাতুন।
নিহত পুলিশ কনস্টেবলের মা রাবেয়া আক্তার অনলাইন নিউজ পোর্টাল জার্মানবাংলা টুয়েন্টিফোরকে শনিবার (৯ জুন) বলেন, ‘আমার বড় ছেলেটাই ছিলেন আমার পরিবারের একমাত্র আয় রোজগারের উৎস। ওকে ছাড়া আমি সবসময় অন্ধকার দেখতাম। আমি সবার কাছে গেছি আমার এক হোলা দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, আমার আর এক হোলাকে সরকারি একটি চাকরি দিয়া আমার পরিবারের জীবন বাচাঁন। এত দিন চলে যাওয়ার পরও আমার ছোট ছেলের কোন সরকারি চাকরির ব্যবস্থা হয়নি। আমার ছেলের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাথে আমার দেখা হয়েছে। তখন আবেগে কিছুই বলতে পারি নাই। আমি আবারো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে বলতে চাই, আমার পরিবারকে বাচাঁন। আমি আর পারছি না।’
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী জানান, ‘মূলত আনছারুলের পরিবারটি সরকারিভাবে যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়েছে। তার ভাইকে আউটসোসিং-এ মদন থানায় পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি তার ভাইকে যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি একটি চাকুরির ব্যবস্থা করে দিতে।