হাবিবুর রহমান,গাজীপুর প্রতিনিধি:দিনমজুর মোসলেম (৬৫)। হাসিখুশী ও দৃঢপ্রত্যয়ী একজন মানুষ । বাড়ির আঙিনায় পেঁপে চাষ করে করছেন সংসারের অভাব মোচন । পেঁপে বিক্রির টাকায় অভাবের পোড়া সংসারে জ্বালিয়েছে স্বচ্ছলতার প্রদীপ ।
গাজীপুরের ডগরী গ্রামে মোসলেমের বাড়ি । অন্যের জমিতেই চাষাবাদ করে কোনমতে চালাতো ৪ সদস্যের সংসার। তিন সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হতো দিন মজুরীর টাকায় । শরীরের চামড়ায় তার বয়সের ছাপ। পুরনো ,অনেকটা ছেঁড়া পোষাক পরিধান করে চলে মোসলেমের সারাদিন । খালি গায়েই যান হাট বাজারে।তাতে তার নেই দু:খ। কষ্ট নেই মনে ।
অশেষ মনোবল নিয়ে মোসলেম গাজীপুর সদর উপজেলার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোনিয়া আক্তারের পরামর্শে শ্রাবণ মাসে নিজ বাড়ির ১২ শতাংশ জমিতে হাইব্রীড জাতের ৭০টি পেঁপেচারা রোপণ করেন । লাঙল নয় , কোদাল দিয়ে কুপিয়ে চাষাবাদ করেন নিজেই । ওই জমিতে পেঁপে চারায় গোবর ও জৈব সার প্রয়োগ করায় তার মোট খরচ হয় ১৭০০ টাকা। সব মিলিয়ে বাগান থেকে তিনি বাজারে নিয়ে ১৬ হাজার টাকার পেপেঁ বিক্রি করেছেন । দিনমজুর মোসলেম জানান, প্রতি কেজি কাচাঁ পেঁপে বিক্রয় ২০ থেকে ২৫ টাকায় । পাকাঁ পেঁপের চাহিদা থাকায় প্রতি পিছ বিকোয় ৪০ থেকে ৫৫ টাকায় । আরো ৬ -৭ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান মোসলেম । পেঁপে বাগানে সাথী ফসল হিসেবে মরিচের আবাদ করে তিনি বাড়তি টাকা কামাচ্ছেন ও বাজার থেকে তাকে মরিচ কিনতে হয়না ।
বর্তমানে তিনি সংসারের যাবতীয় খরচ মেটাচ্ছেন ওই পেঁপে বিক্রির টাকা দিয়েই । আরো বড়ো পরিসরে পেপেঁ চাষাবাদ করবেন বলে জানান দিন মজুর মোসলেম । এছাড়াও সপ্তাহের ৩ দিন দিনমজুরী করে উপার্জন করেন ১২০০ টাকা । সব মিলিয়ে পেপেঁচাষাবাদ ও পরিশ্রমের এ টাকায় তিনি সংসারে জ্বালিয়েছেন স্বচ্ছলতার প্রদীপ । কারো কাছে দিনমজুর হয়েও হাত পাততে হয়না । এ প্রতিনিধির নিকট অকপটে এসব কথা জানালেন দিনমজুর মোসলেম ।
গাজীপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা সুলতানা বলেন ,বছরের সারা মাস পেঁপে চাষ করা যায় । স্থানীয়ভাবে মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মীরা কৃষি বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন । উর্বর দোআশঁ মাটি ও উচুঁ জমি পেঁপে চাষের জন্য ভালো বলে জানালেন ওই কৃষি কর্মকর্তা ।