অষ্ট্রেলিয়া থেকে নাইম আবদুল্লাহ: গত ২৩ আগষ্ট (রোববার) অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী শরীয়তপুরবাসী জেলা ফোরাম বাংলাদেশ হাই কমিশনের সিডনিস্থ অস্হায়ী কনুসলার ক্যাম্পে প্রধানমন্ত্রী সমীপে স্মারকলিপি প্রদান করে।
শরীয়তপুরবাসী পক্ষ থেকে কৃষিবিদ রফিকউদ্দিন, ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ আলী শিকদার, সেলিম শাহনুরী, আইনজীবি নিম তালুকদারসহ অন্যান্যরা সিডনির ক্যাম্পসীতে অস্হায়ী কনুসলার ক্যাম্পে হাই কমিশনের প্রধান সচিব নাজমা আক্তারের হাতে স্মারকলিপিটি তুলে দেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা এবং নওপাড়া ইউনিয়ন দুটি কয়েক বছর পূর্বেই পদ্মার ভাংঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মা নদীর এই ভাঙ্গন গত প্রায় দুই যুগ আগে হতে শুরু হয়ে তা বর্তমানে চরম আকার ধারণ করে শত শত বছরের প্রাচীন জনপদ নড়িয়া এবং জাজিরার গ্রামের পর গ্রাম ক্রমান্বয়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নদীর ভাঙ্গন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে প্রাথমিকভাবে বিবেচিত হলেও সাইক্লোন বা টর্নেডোর ন্যায় অপ্রতিরোধ্য নহে। সাইক্লোন বা টর্নেডো হঠাৎ আঘাত করে চলে যায় কিন্তু নদী ভাঙ্গনে আস্তে আস্তে শুরু হয়ে ক্রমাগত চলতে থাকে। নদী ভাঙ্গন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের অনেক দেশ নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করেছে। এক সময়ের চীনের দুঃখ বলা হত ‘হুআংহু নদী’ কে আর এখন এই নদী চীনের সম্পদ হিসেবে বিবেচিত।
সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণলয় ও বিভাগ সময়মত নদী শাসনের কাজ সম্পন্ন না করাসহ অত্র এলাকার রাজনীতিবীদদের দীর্ঘ দিনের অবহেলা এবং উদাসীনতার কারণে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে আমাদের কষ্টার্জিত সকল সম্পদ, পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটি, আবাদী জমিসহ সবকিছু নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে উপজেলা দুটি আজ অস্তিত্বহীন হওয়ার পথে। এই নদী ভাঙ্গনে দুটি উপজেলার প্রায় দুই হাজার পরিবার বসতভিটাহীন হয়ে পরেছে উল্লেখ করা হয় স্মারকলিপিতে। আবাদীজমিসহ হাটবাজার নদীতে ভেঙ্গে যাওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাবে অনেক পরিবার কর্মহীন হয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে।
এই অসহায় পরিবারগুলীর সার্বিক পুনর্বাসনকল্পে সরকারী খাস জমিতে বসতভিটা নির্মাণ করে নুতনভাবে জীবন শুরু করার জন্য সহজ শর্তে ও নাম মাত্র সুদে প্রতিটি পরিবারকে দীর্ঘ মেয়াদী দশলক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়। পাশাপাশি অবিলম্বে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলাকে পদ্মার করাল গ্রাস হতে রক্ষাকল্পে পদ্মার দক্ষিণ পাড়ে ১২ মাইল দীর্ঘ বেড়ীবাধ নির্মাণের কাজ জরুরিভিত্তিতে শুরু করার জোর দাবি জানানো হয়।