ডেস্ক রিপোর্ট: মিয়ানমার থেকে অত্যাচারের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করে মিয়ানমার ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরো সহযোগিতা চেয়েছে তার সরকার।
সোমবার মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নেইপিদোতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে একথা বলেন সু চি। বৈঠকে মিয়ানমারের সেনা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাং-ও উপস্থিত ছিলেন।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু হওয়ার পর নিরাপত্তা পরিষদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের এটাই প্রথম বৈঠক।
এদিন মিয়ানমারের আইনপ্রণেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিরা। জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের একথা জানান।
মঙ্গলবার সকালে রাখাইনের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো পরিদর্শনে যায় নিরাপত্তা পষিদের প্রতিনিধি দলটি।
এর আগে ২৮ এপ্রিল বিকাল চারটার দিকে কুয়েত থেকে সরাসরি একটি চার্টার বিমানে করে কক্সবাজার পৌঁছায় ৩০ সদস্যের জাতিসংঘ প্রতিনিধি দল। এদিন ইনানীর একটি হোটেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, নিরাপত্তা বাহিনী ও রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবসন কমিশনারের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তারা।
২৯ এপ্রিল সকালে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের তমব্রু শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দেখতে যান জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা। একইদিন কুতুপালং শরণার্থী শিবিরও পরিদর্শন করে প্রতিনিধি দলটি। পরে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তারা মিয়ানমারের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন।
এর আগে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধি দলটি সাংবাদিকদের জানান, রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারের। দেশটিকে এ সংকটের সমাধান করতে হবে। তবে খুব শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তারা।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের দমন-পীড়নের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত খুঁজে পেয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন রোহিঙ্গা নিধনের ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলেও আখ্যা দিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গা নিপীড়নকে জাতিগত নিধন বলে অভিহিত করেছে। তবে বরাবরের মতো মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করে আসছে।