গতকাল আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মধ্যকার ম্যাচের একটি মুহূর্ত ধরা পড়ল আলোকচিত্রীর ক্যামেরায়। উইকেট পাওয়ার পর মোস্তাফিজুর রহমানকে জড়িয়ে ধরছেন রোহিত শর্মা। দুজনের দৃষ্টিই আকাশের দিকে। হাস্যোজ্জ্বল দুই তারকার মুখই।
মুহূর্তটি এমন আহামরি কিছু নয়। কিন্তু এই ছবিতে কী যেন একটা মিশে আছে! একজন ভারতের তারকা, অন্যজন বাংলাদেশের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুজনই দুজনের প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু আইপিএল সুযোগ করে দিয়েছে একে অন্যের সতীর্থ হওয়ার। একে অন্যের সুখ-দুঃখের অংশীদার হওয়ার।
গতকাল সানরাইজার্সের বিপক্ষে দারুণ বল করেছেন মোস্তাফিজ। ৪ ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন ম্যাচ জিততে সানরাইজার্সের যখন ১২ বলে ১২ রান দরকার, ঠিক তখন। প্রথম বলে রান এল। পরের তিন বলে দুটি ডট আর একটি উইকেট! সিদ্ধার্থ কৌলকে করলেন কট অ্যান্ড বোল্ড। পরের বলটি ডট দিয়ে শেষ বলে ফেরালেন সন্দ্বীপ শর্মাকে। এমন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ১ রান দিয়ে ২ উইকেট। মোস্তাফিজকে কেন এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টিতে ইনিংসের শেষ দিকে অন্যতম সেরা বোলার বলা হয়, সেটা দারুণভাবেই দেখালেন তিনি।
আলোকচিত্রীর ক্যামেরায় ধরা পড়া ছবিটা সিদ্ধার্থ কৌলকে ফেরানোর পরপরই—বলটা লুফেই তা আকাশে ছুড়ে মারলেন মোস্তাফিজ। রোহিত মোস্তাফিজকে অভিনন্দন জানাতে ছুটে আসতেই দুজনেরই মনে পড়ে গেল বলটা তো শূন্যে!
এই রোহিত শর্মাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বারবার আউট হয়েছেন মোস্তাফিজের বলে। এখনো পর্যন্ত ভারতের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানের কাছে মোস্তাফিজ এক দুর্বোধ্য বোলারই। মোস্তাফিজ ভারতের বিপক্ষে যে ৯ ম্যাচ খেলেছেন তার ৫টিতেই রোহিতকে ফিরিয়েছেন তিনি। তিন বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রায় ‘বানি’ বানিয়ে ফেললেও ভারতীয় ওপেনারের অধিনায়কত্বেই এবারের আইপিএলে নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন মোস্তাফিজ—আইপিএলের সৌন্দর্য তো এখানেই।
কাল মোস্তাফিজ ‘শত্রু’ হয়ে থাকলেন সাকিব আল হাসানের। মোস্তাফিজের বলে বাউন্ডারিও মারলেন। ক্রিকেটপ্রেমীরা অধীর হয়ে থাকলেন এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখার আশায়। মোস্তাফিজকে জড়িয়ে ধরে রোহিত যে দৃশ্যটির অবতারণা করেছেন, সেটির চেয়ে কিন্তু মোস্তাফিজ-সাকিবের মুখোমুখি হওয়ার দৃশ্যটি ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য কম আকর্ষণীয় কিছু ছিল না। এমন দৃশ্য বারবার চোখে পড়ে বলেই তো আইপিএল, বিপিএলের মতো টুর্নামেন্টগুলো এত জনপ্রিয়।